অবশেষে অনুষ্ঠিত হয়েছে বহুল আকাঙ্খিত নাসিক নির্বাচন, এই নির্বাচনে ইতিমধ্যে বিজয়ী হয়েছেন মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভি এবং তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই আলোচনায় রয়েছেন অন্যদিকে তার প্রতিদ্বন্দি খন্দকার তৈমুর আলম এই নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন তবে এই নির্বানকে ঘিরে মানুষের মধ্যে ছিল বেশ উত্তেজনা এবং আগ্রহ।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) নির্বাচনে টানা তৃতীয়বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন সেলিনা হায়াৎ আইভী ড. তিনি ২০১১ সালে ইতিহাস তৈরি করেছিলেন যখন তিনি দেশের যে কোনও পৌর কর্পোরেশনে প্রথম মহিলা মেয়র হিসাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। এবার তৃতীয়বারের মতো মেয়র হয়ে নতুন রেকর্ড গড়লেন তিনি।
সেলিনা হায়াৎ আইভী ১৯৬৭ সালের ৬ জুন নারায়ণগঞ্জের একটি রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আলী আহমেদ চুনকা এবং মায়ের নাম মমতাজ বেগম। আলী আহমেদ চুনকা বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ পৌর নির্বাচনে জয়ী হন এবং মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরিবারের পাঁচ সন্তানের মধ্যে আইভী সবার বড়। তিনি দেওভোগ আখড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষাজীবন শুরু করেন। পরে তিনি নারায়ণগঞ্জ প্রিপারেটরি স্কুলে ভর্তি হন এবং ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। এরপর তিনি মরগান গার্লস হাই স্কুলে ভর্তি হন। তিনি 1989 সালে ট্যালেন্টপুলে জুনিয়র স্কলারশিপ পেয়েছিলেন এবং 1982 সালে স্টার মার্ক নিয়ে হাই স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
আইভী পেয়েছেন ১,৮১,২৬৩ ভোট, তৈমুর পেয়েছেন ৯২,১৭১ ভোট।তারপরে তিনি রাশিয়ান সরকারী বৃত্তিতে মেডিসিন অধ্যয়নের জন্য ১৯৭৫ সালে ওডেসা পিরাগোব মেডিকেল ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন এবং ১৯৯২ সালে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে তিনি ১৯৯২-৯৩ সালে ঢাকা মিডফোর্ট হাসপাতালে ইন্টার্নশিপ সম্পন্ন করেন। কর্মজীবনে তিনি ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত মিডফোর্ট হাসপাতালে এবং ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালে অনারারি চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেন।
ছাত্রাবস্থায়ই বাবার সঙ্গে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন আইভি। ১৯৯৩ সালে তিনি নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক ছিলেন। ২০০৩ সালে অনুষ্ঠিত পৌরসভার সভাপতি নির্বাচনে জয়ী হয়ে তিনি নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার প্রথম মহিলা সভাপতি নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি নারায়ণগঞ্জ শহর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি। তিনি আলী আহমেদ চুনকা ফাউন্ডেশন এবং নারায়ণগঞ্জ হার্ট ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং স্বাধীনতা চিকিৎসা পরিষদ (স্বাচিপ) এর নারায়ণগঞ্জ জেলা সমন্বয়কারীও।
প্রথম নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ৩০ অক্টোবর, ২০১১। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে শামীম ওসমানকে পরাজিত করে নির্বাচনে জয়লাভ করেন। গত ২৬ নভেম্বর তিনি সিটি করপোরেশনের প্রথম নারী মেয়র হিসেবে শপথ নেন। ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ তারিখে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে পুনরায় নির্বাচিত হন। তিনি ৫ জানুয়ারী, ২০১৬ তারিখে মেয়র হিসাবে দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেন।
আইভী ১৯৯৫ সালের ১৫ নভেম্বর রাজবাড়ীর বাসিন্দা কাজী আহসান হায়াতকে বিয়ে করেন। এই দম্পতির দুই ছেলে রয়েছে। নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে তৃতীয়বারের মতো মেয়র পদে লড়ছেন সেলিনা হায়াৎ আইভী। প্রথমবারের মতো, ২০১১ সালে, তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে বিজয়ী হন। ২০১৪ সালে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো জয়ী হন। এবার টানা তৃতীয়বারের মতো নারায়ণগঞ্জ সিটির মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন সেলিনা হায়াৎ আইভী।
নাসিক নির্বাচনে প্রথম থেকেই ব্যপকভাবে আলোচনা শুরু হয়েছে এবং সেই সাথে দেখা যাচ্ছে মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভি বিজয়ী হওয়ার পরএই আলোচনা আরো বেশী বেগবান হয়েছে। ণাসিক নির্বাচনে মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভির প্রতিদ্বন্দি হিসেবে দাড়িয়েছিলেন বিএনপির নেতা তৈমুর এবং তিনি নির্বাচনে নামার পর থেকেই বেশ উত্তেজনা শুরু হয়েছিল
Leave a Reply