গত বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের র্যাবের সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এরপর থেকেই র্যাবের ওই সাত কর্মকর্তাকে নিয়ে বেষহ আলোচনা শুরু হয়। এমনকি দেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিরাও প্রায় সময় নিষেধাজ্ঞায় পড়া র্যাবের সেই সাত কর্মকর্তাদের নিয়ে মন্তব্য করেন। এবার জাতীয় সংসদে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সেই সাত কর্মকর্তার বিষয়ে কথা বলেছে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা। এ সময় তিনি আরো বেশ কিছু বক্তব্য দিয়েছেন। এমনকি তিনি অভিযোগ তুলেছেন এই নিষেধাজ্ঞার বিষয় নিয়ে কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছেন।
বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যে সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তারা “দক্ষ এবং দেশপ্রেমিক”। তিনি আশা করেন যে মার্কিন সরকার তাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কারণে শীঘ্রই এই দেশপ্রেমিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে।
এদিকে এই নিষেধাজ্ঞার পরিপ্রেক্ষিতে কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গু’জব ছড়াচ্ছে তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ড. তিনি জাতীয় স্বার্থে ইস্যু না করে ঐক্যবদ্ধভাবে বিষয়টি সমাধানের জন্য রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।
সোমবার (১৭ জানুয়ারি) সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে বাবলা বলেন, “হঠাৎ করে কেন নিষেধাজ্ঞা জারি হলো বুঝতে পারছেন না। আমি মনে করি আমাদের দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দেশ ও দেশের মানুষের জন্য নিবেদিতপ্রাণ হিসেবে কাজ করে। যাই হোক, আমি বলবো না যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সমস্ত সদস্যরা তুলসী পাতা। তবে যাদের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তাদের উচ্চ যোগ্য কর্মকর্তা এবং দেশপ্রেমিক হিসাবে জানি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তা সরকার তদন্ত করছে। আমরা বিশ্বাস করি যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সাথে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার শীঘ্রই আমাদের দেশপ্রেমিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে।”
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পর দেশে গু’জব ছড়াচ্ছে। প্রতিদিনই আসছে নানা খবর। আপনি প্রতিদিন শুনছেন যে এই বা সেই ভিসা বাতিল করা হয়েছে, এই বা ওটা প্রবেশ করতে পারেনি। একই সঙ্গে এখানে-সেখানে আলোচনা হচ্ছে: এই নিষেধাজ্ঞার কারণে সরকার কি চাপে আছে? আগামী দিনে সরকার কি আরও কূটনৈতিক চাপে পড়তে যাচ্ছে? ‘
বাবলা বলেন, “আমরা দেখেছি বিদেশে বসবাসকারী কিছু লোক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন গুজব ছড়াচ্ছে। আর আমাদের দেশের কিছু মানুষ সমাজের সর্বস্তরে এমন গু’জব ছড়াচ্ছে। একের পর এক গু’জব ছড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা বাতিলের বিষয়ে বিভিন্ন সরকারের বিরুদ্ধে। বিভিন্ন পর্যায়ের মন্ত্রী ও কর্মকর্তারা। তবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ও দূতাবাস ভিসা বাতিলের বিষয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি। ফলে এ ধরনের গু’জব যাচাই করার কোনো সম্ভাবনা নেই।”
রাজনীতিবিদদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে জাপার এমপি বলেন, আমাদের দেশের কিছু দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দলের নেতারা এসব বিষয়ে নেতিবাচক কথা বলছেন। এটা খুবই দুঃখজনক. আমরা বিভিন্ন দল এবং মতামত হতে পারে. কিন্তু রাষ্ট্রের বৃহত্তর কল্যাণে আমাদের সবাইকে আরও দায়িত্বশীল ও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমি রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে বলব বিশ্ব মঞ্চে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষু’ণ্ন হয় এমন বক্তব্য না দিতে।
ভারতে শত শত লোকের বসবাস উল্লেখ করে তিনি বলেন: “তারা একে অপরের সাথে খুব কঠোরভাবে কথা বলে। কিন্তু যখন জাতীয় স্বার্থের কথা আসে, তারা সবাই এক হয়ে যায়। একইভাবে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা তারা আমাদের জাতীয় সমস্যা তাই সমালোচনা না করে সর্বসম্মতিক্রমে মোকাবিলা করতে হবে, বিশ্ব দরবারে আমাদের ভাবমূর্তি জড়িত।
এদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওই নিষেধাজ্ঞার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা চলছে। বিশেষ করে দেশের বাহির থেকে অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করছেন। এ কারণে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে মনে করেন অনেকে। আর আজ সোমবার জাতীয় সংসদে জাপা এমপি বেশ কিছু বক্তব্য তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করে তাদের মোকাবিলা করতে হবে।
Leave a Reply